ভোলা জার্নাল রিপোর্ট।।
ভোলায় ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগের দাবিতে ভোলার সর্বস্তরের মানুষের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। ভোলায় একটানা এই আন্দোলনের অংশবিশেষ মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ছাত্র জনতারা। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে শহরের সার্কিট হাউস রোডে অবস্থিত পেট্রোবাংলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ জড়ো হয়ে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির সামনে ‘ভোলার গ্যাস ভোলায় চাই’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
এ কর্মসূচির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে ভোলা আলতাজের রহমান ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, ভোলায় প্রাপ্ত গ্যাস আগে ভোলার ঘরে ঘরে সংযোগ দিতে হবে। এটা আমাদের ন্যায্য অধিকার। তিনি আরও বলেন, ভোলার গ্যাস ভোলায় না দেওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আলতাজের রহমান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরাও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন।
এছারাও আরও বক্তব্য দেন আলতাজের রহমান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক শাহ নেওয়াজ মনির, আনোয়ার হোসেন, ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মো: মোবাশ্বির-উল হক নাঈম, শিক্ষক মো: আবু তাহের, মহিউদ্দিন, ভোলা জেলা ইসলামি আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মো: তরিকুল ইসলাম, ব্যবসায়ী আব্দুল গনি, গ্রাহক শাহে আলম, বিএনপি নেতা বশির আহমেদ, ব-দ্বীপ ফোরামের নির্বাহী পরিচালক মীর মোশারফ অমী, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ফাহিম প্রমূখ।
এ বিষয়ে ভোলা সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যানেজার প্রকৌশলী অলিউল্ল্যহ বলেন, ভোলাবাসীর দাবির বিষয়টি আমরা পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি। আমরা যতটুকু জেনেছি এর প্রেক্ষিতে আগামী ২৮ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা পরিষদে একটি জরুরি সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সেই পর্যন্ত ভোলাবাসীকে শান্ত থাকারও অনুরোধ জানান তিনি। প্রকৌশলী অলিউল্ল্যহ আরও জানান, ভোলা পৌর শহরে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৩৭৫ জনের ঘরে আবাসিকভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আরও আবেদন জমা আছে ২ হাজার ১৫টি। এর মধ্যে টাকা জমা নেওয়া হয়েছে ৭৭৭টি।
উল্লেখ্য, গত রোববার (২০ এপ্রিল) সকালে ভোলায় গ্যাসের দাবিতে শহরের বাংলা স্কুল মাঠে সমাবেশ করে ভোলা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন ‘আগামীর ভোলা’ নামে একটি সামাজিক সংগঠন। সংগঠনটির মুখপাত্র মীর মোহাম্মদ জসিম উদদীন এতে সভাপতিত্ব করেন। একই দাবিতে ২৭ এপ্রিল ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহা সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইলিশা-১ কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত ভোলায় গ্যাসকূপের সংখ্যা দাঁড়াল ৯। তিনটি কূপ খনন করেছে রাশিয়ার কোম্পানি গেজপ্রম। এর আগে ছয়টি কূপ খনন করেছে বাপেক্স নিজে। সরকারের প্রাথমিক হিসাবে এই ৯টি কূপে মোট গ্যাস রয়েছে ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ঘনফুটের (টিসিএফ) মতো। বর্তমানে দেশে প্রতিবছর গ্যাস ব্যবহারের পরিমাণ প্রায় ১ টিসিএফ। ভোলা গ্যাসক্ষেত্রটি বাপেক্স আবিষ্কার করেছিল প্রায় ২৬ বছর আগে। প্রথমে গ্যাস আবিষ্কৃত হয়েছিল ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহবাজপুরে। এরপর পর্যায়ক্রমে আরো ৮ টি গ্যাস কূপের সন্দান পাওয়া গেছে ভোলায়।