সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৮:০৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
বিদেশ গেলেন আন্দালিব রহমান পার্থ’র স্ত্রী শাইরা শারমিন জাতীয় যুব-সংহতির ভোলা জেলা শাখার কমিটি ঘোষনা দিলেন চেয়ারম্যান-পার্থ’ জাতীয় যুব’সংহতির কমিটি তালিকা বিজেপি চেয়ারম্যানের হাতে, যেকোনো মুহূর্তে ঘোষণা ভোলায় যৌক্তিক ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে স্কুল শিক্ষার্থীরা ভোলায় মেঘনা’নদী তীরবর্তী এলাকায় তীব্র ভাঙনে বসত’ঘর ও ফসলি জমি বিলীন, আতংকিত স্থানীয় বাসিন্দারা  পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে ভোলা জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত ভোলায় কোস্টগার্ড ও পুলিশের যৌথ অভিযানে হাতবোমা ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার সাবেক পানিসম্পদ ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মরহুম আলহাজ্ব মোশারেফ হোসেন শাজাহানের ১৩ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ভোলায় বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের কর্মবিরতি পালন ভোলায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাড়ে ৩শ’একর জমি বন্দোবস্ত দেয়ায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন 

মদনপুরের ‘বৈরাগী চরের অবেহেলিত শিশুদের জন্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করছেন ‘চকেট জামাল’

  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
  • ৯৪ বার পঠিত

ইয়ামিন হোসেন, ভোলা জার্নাল॥

মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং মনুষ্যত্ব বিকাশে শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। আর প্রাথমিক শিক্ষাই হচ্ছে সকল শিক্ষার মূল ভিত্তি। এ উপলব্ধি থেকেই “চলো, সবাই স্কুলে যাই” এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে মাথায় রেখে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে ও প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যকে সামনে রেখে আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন চকেট ভোলার উপকূলীয় চরের শিশু শিক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।

বর্তমান আধুনিক সময়কালে ২০২৫ সালে এসেও প্রাথমিক শিক্ষা সবার জন্য বাধ্যতামূলক হলেও ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার বিচ্ছিন্ন চর মদনপুর ইউনিয়নের চর-বৈরাগীর গুচ্ছগ্রামের শিশুরা এখনো শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। দরিদ্রতা, অসচেতনতায় এসব শিশুদের সময় কাটে নদীতে মাছ ধরে। একটি স্কুলের অভাবে শিক্ষার আলো থেকে দূরে ছিটকে পড়ে আছে এই চরের কয়েক’শ শিশুরা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিচ্ছিন্ন মদনপুরে কাচিয়া কাঠির মাথা থেকে প্রায় ১” ঘন্টা ইঞ্জিন চালিত ট্রলার যোগে গিয়ে সেখানে দেখা যায়, মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এই চরে সাড়ে ৬’শ পরিবার বসবাস করছে। স্কুলে পড়ার বয়সে সহস্রাধিক শিশুদের শিক্ষার কোনো ব্যবস্থা এখানে নেই। যে শিশুর হাতে থাকতো বই, কলম, খাতা, তার বদলে সে শিশুর হাতে চায়ের কেটলি, মাছ শিকারের সামগ্রী আর গরু-ছাগলের রশি। ১০ বছরের শিশুই যেন পরিবারের কর্তা, অসচেতনতা ও অপুষ্টিতে নানান রোগে আক্রান্ত এসব শিশুরা। স্কুলে থাকার শিশু কেন এ ছোট্ট বয়সে পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে নিল? এ নিয়ে বিস্তারিত জানতে গিয়ে শিশু ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিচ্ছিন্ন এ চরে সরকার আসে, জন-প্রতিনিধি আসে, নেতা আসে কিন্তু চর-বাসীর কথা কেউ ভাবেনি কোনদিন। জমি দখল, লুটপাট ও চরের জমি চুষে নেওয়াই ছিলো সকলের ধান্দাবাজি। চরবাসী অভাবে বিচ্ছিন্ন চরে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করলেও তারা চায় সন্তানদের সুন্দর জীবন দান করতে কিন্তু অর্থ আর যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় ইচ্ছা চাপা দিয়ে সন্তানকে দিতে হয়েছে ঝুকিপূর্ণ, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে।

তবে অবশেষে এ চরবাসীর সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এবং সাবেক এমপি ও বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ’র সপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিচ্ছিন্ন চরের এসব শিক্ষা থেকে বঞ্চিত  শিশুদের আলোতে ফিরিয়ে নিতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন আন্দালিব রহমান পার্থ’ নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি বিজেপির অংগ’সংগঠন শ্রমিক পার্টির ভোলা জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন চকেট। চরবৈরাগী প্রাথমিক বিদ্যালয়’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রাথমিক শিক্ষা’য় শিক্ষিত হবে এ চরের শিশুরা। এই চরের শিশুদের ও তাদের অভিভাবকদের এমনটাই স্বপ্ন দেখিয়েছেন জামাল উদ্দিন চকেট। এই প্রেক্ষিতে এখানকার শিশু ও অভিভাবকদের মাঝে আনন্দের যেন সীমা নেই। জানাযায়, শীঘ্রই উদ্বোধন হবে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। একটি স্কুলের কার্যক্রম শুরু হলে ভাগ্য বদলে যাবে এই চরবাসীর, এমনটা প্রত্যাশা এ চরের বাসিন্দাদের।

সাব্বির নামের এক শিশু স্থানীয় চায়ের দোকানের কর্মচারী, ১০ বছরের সাব্বির কেন স্কুলে যাচ্ছে না, জানতে চাইলে সাব্বির বলেন, স্কুল অনেক দুরে, তাই যাই না। রুপিয়া নামের এক শিশু বলেন, ইস্কুল নাই, পড়ি না। জাহানারা বেগম নামের এক নারী বলেন, আমার ৫ ছেলে মেয়ে, নদীপথে এ শিশুদের ইস্কুলে যেতে ভয় হয় দেখে পড়ালেখা হয়নি। তবে এখন আমাদের এখানে একটা স্কুল চালু হইছে। সেখানে পড়াবো। মা’ রোকসানা বলেন, আমরা গরীব মানুষ, চরে থাকি, আশেপাশে স্কুল না থাকায় পড়াতে পারিনি এখন জামাল মিয়া একটা স্কুল করছে, সেখানে আমাদের পোলাপান পড়াবো। হযরত আলী নামের এক জেলে বলেন, চরবাসীর সন্তানের জন্য জামাল মিয়া একটি স্কুল খুলেছে, আমরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ।

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক নিরব বলেন, এ যুগের নেতারা শিশুদের অপরাধী করে তুলে, অনেকে মাদক তুলে দেয় আর জামাল মিয়া অন্ধকারে থাকা শিশুদের আলোকিত করতে পড়াশোনার জন্য উৎসাহ দেয়, তাই এ স্কুল চালু করেছে। চর-বাসীর জন্য এটা আর্শিবাদ। বৈরাগীর চরে সংবাদ প্রতিবেদকের সাথে সাক্ষাত হয় কাচিয়া ইউনিয়ন বিজেপির নেতা সিরাজুল ইসলাম মামুনের সাথে। তিনি বলেন, আমি একটি কাজে এসেছি এ চরে, এখানে শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত এটা নতুন নয়, একটা সুন্দর সমাজ গড়তে সবার আগে শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে আর এই চরের কয়েক’শ শিশুকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রেখে সমাজকে আলোকিত করা সম্ভব নয়, তবে যতটুকু জানতে পেরেছি, ভোলা জেলা শ্রমিক পার্টির সভাপতি আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন মিয়া শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে একটি প্রাইমারী স্কুল প্রতিষ্ঠা করছে। চরবাসীর জন্য এটা আর্শিবাদ। আশা করি এ স্কুলের মাধ্যমে চরের বাসিন্দাদের সন্তানদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত হবে।

স্কুল’টি সর্ম্পকে জানতে চাইলে আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন চকেট বলেন, প্রাকৃতিকভাবে সৌন্দর্যমণ্ডিত আমাদের দেশে অসংখ্য নদ-নদী আছে। এ কারণে ভৌগোলিকভাবেই নদীমাতৃক দেশ হিসেবে বিশব্যাপী বাংলাদেশের স্বীকৃতি রয়েছে। নদীর বুকে বসবাস করা আমাদের সমাজের চরাঞ্চলের প্রতিটি শিশুর মৌলিক অধিকার আছে শিক্ষা অর্জনের। কিনতু মদনপুরের এ চরের শিশুরা শিক্ষার অধিকার থেকে এতদিন বঞ্চিত ছিল। আমি মনে করি, প্রতিটি শিশুর শিক্ষা পাওয়ার সমান সুযোগ পাওয়া উচিত। তিনি বলেন, আমি দেখেছি অন্যদের মত এই বৈরাগীর চরের শিশুরাও অনেক মেধাবী ও পড়ালেখায় বেশ মনোযোগী। আমি আশাকরি এখন থেকে প্রাথমিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে এরা বেড়ে উঠবে ও এদের অতীতকালের পরিবর্তন হবে। তাই এই চরের শিশুদের সমাজে সুশিক্ষায় প্রতিষ্ঠিত করতে আমি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেছি। শীঘ্রই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি উদ্বোধন করা হবে। এছারাও তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে এই চরের সন্তানদের শিক্ষা, চিকিৎসা নিশ্চিতে এগিয়ে আসার জন্য অনুরোধ  জানান জামাল উদ্দিন চকেট।

প্রসংগত, ভোলার দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত মেঘনা নদীর মধ্যবর্তী চর-বৈরাগিয়ায় সরকারের আশ্রায়ন প্রকল্পের ছিন্নমূল বহু পরিবার ও কয়েক’শ জেলে-কৃষকদের পরিবার এই চরে বসবাস করে।

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

You cannot copy content of this page